কমিউনিটি ক্লিনিকের মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়াররা কি যথাযথ পারিশ্রমিক পাচ্ছে? এই বিষয়ে জানতে গেলে আগে আমাদের জানতে হবে এমএইচভিদের কর্ম পরিধি। একজন এমএইচভি মাসে যে পরিমাণ কাজ করে তার বিনিময়ে মাসে মাত্র ৩২০০ টাকা ভাতা পায়। এখন আমাদের মাথা পিছু আয় বছরে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা। সেখানে একজন এমএইচভির ভাতা মাসে ৩২০০ টাকা মাত্র। এখন আলোচনা করা যাক একজন এমএইচভির কর্ম পরিধি।
১। মাসে ২০০ থেকে ৩৫০ বা তার বেশি খানা ভিজিট করা এবং রোগী ক্লিনিকে প্রেরন করতে হয়। এমএইচভি তার কর্ম এলাকার প্রতিটি খানায় গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া গর্ভবতীদের পরামর্শ দেওয়া এবং ওই খানার রোগিদের সিসিতে প্রেরণ করতে হয়।
২। মাসে ১২ টা গ্রুপ ভিত্তি কাজ করতে হয়। ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ নিয়ে প্রতি সপ্তাহে ৩টা উঠান বৈঠক পরিচালনা করতে হয়। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস, গর্ভাবতী মায়েদের পুষ্টি, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানাের উপকারিতা সহ এই ধনের ১২ টা উঠান বৈঠক করতে হয়।
৩। নিজ কর্ম এলাকার ইপিআই কেন্দ্রে কাজ করতে হয়।
৪। কমিউনিটি গ্রুপের সভা ও কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপের সভা পরিচালনা করতে সিএইচসিপিকে সহযোগিতা করতে হয়।
৫। প্রতি সপ্তাহে ১ বা ২ দিন ক্লিনিকে যেয়ে সিএইচসিপিকে সহযোগিতা করতে হয়।
৬। নিজ কর্ম এলাকায় কেউ মারা গেলে (বিশেষ করে মা ও শিশু) মৃত্যুর মৌখিক ও সামাজিক কারন তদন্ত করতে হয়।
৭। বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্রাম যেমন- এ+ ক্যাম্পেইন, হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন, কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো, ফাইলেরিয়া, ভায়া টেস্ট, করোনা টিকা সহ বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্রামে কাজ করতে হয়।
এছাড়াও আরো অনেক কাজ আছে।
কিন্তু এতো কিছু কাজের বিপরীতে একজন মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার মাসে মাত্র ৩২০০ (তিন হাজার দুই শত) টাকা পায়। এই কাজ করতে এমএইচভিদের মধ্যে মাসে প্রায় ৪০০ টাকা ইন্টারনেট খরচ হয়। আর যাওয়া আসা খরচতো আছেই। তারপরেও এই ভাতা মাসে মাসে দেওয়া হয়না। ৩ থেকে ৬ মাস কখনো ৯ মাস পরে ভাতা দেওয়া হয়।
এই করোনা পরিস্থিতিতে ২৪০০০ এমএইচভি জিবনের ঝুকি নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু এমএইচভিরা অত্যান্ত মানবতার জীবন যাপন করছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এমএইচভিদের ভাতা বাড়ানো দরকার। এবং একটা সর্বনিম্ন স্কেল পর্যায়ে নিয়ে আসা সময়ের দাবি।